বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। হাসিনা সরকারের পতনের পর গুঞ্জন উঠছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ভূমিকা নিয়ে। অনেকে মনে করছেন, হাসিনাকে উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পরোক্ষ মদদ রয়েছে।
তবে এই গুঞ্জন-জল্পনার মধ্যে প্রায় এক মাস পর আবারও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত ছিল না বলে স্পষ্ট করে জানিয়েছে দেশটি।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, বাংলাদেশে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত ছিল না।
তবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত ও আগ্রহী বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক জানতে চান, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে কিছু সংবাদমাধ্যম। এই অভিযোগ কি যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ককে চাপে ফেলতে পারে?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমি সেই রিপোর্টগুলো দেখিনি। তবে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, সেগুলো সত্য নয়। এই কারণেই হয়তো আমি সেসব রিপোর্ট দেখিনি।
আরেক প্রশ্নে সাংবাদিক জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চাইছে? বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে চীনা প্রভাবের দাবি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এই পরিস্থিতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করে এবং এই অঞ্চলে কি কোনও কৌশলগত উদ্বেগ আছে বলে মনে করছে কিনা?
জবাবে মার্কিন এই কর্মকর্তা বলেন, দেখুন, আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কাজ করার জন্য প্রস্তুত এবং আগ্রহী। কারণ এই সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে চলেছে। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।
এর আগেও গত ১৩ আগস্ট স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক ব্রিফিংয়ে বেদান্ত প্যাটেল দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশে সরকার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই।
তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশে সরকার পতনে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত এমন ধারণা একেবারেই মিথ্যা। আমরা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রচুর বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াতে দেখেছি। এবং আমরা ডিজিটাল ইকোসিস্টেমজুড়ে তথ্যের অখণ্ডতা জোরদার করার জন্য অবিশ্বাস্যভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের অংশীদারদের ব্যাপারে আমরা গুরুত্ব দেই।
এরও আগে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমাদের আদৌ কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে যদি কোনো প্রতিবেদনে বলা হয় বা গুজব ছড়ানো হয় তবে তা নিছক মিথ্যা।’