ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার। অন্তত এক বছর ধরে গোপন অবস্থানে থাকার পর ইসরাইলি বাহিনীর হাতেই মৃত্যু হলো তার। কীভাবে তা সম্ভব হলো এবং এর পিছনে ইসরাইলি বাহিনীর কর্মপরিকল্পনাই বা কি ছিল, তা নিয়ে বিস্তারিত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলার পর হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার চেষ্টা করলেও বারবার ব্যর্থ হয় দখলদার ইসরাইল। ধারণা করা হচ্ছিল, হামাসের গোপন সুড়ঙ্গের কোনো একটিতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ছিলেন তিনি। এমনকি ইসরাইল থেকে আটক হওয়া জিম্মিদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিলেন তিনি। তবে শেষমেশ ইসরাইলি বাহিনীর হাতেই মৃত্যু হলো হামাসের প্রভাবশালী এই নেতার।
ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্স জানায়, অন্যান্য দিনের মতোই বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাতেও গাজার দক্ষিণাঞ্চলের তাল আল সুলতান এলাকায় টহলে বের হয়েছিলেন ইসরাইলি সেনারা। এ সময় তিন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হত্যা করে সেদিনকার মতো ফেরত যান সেনারা। পরদিন সকালে নিহতদের পরীক্ষা করতে এলে তাদের একজনের সঙ্গে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মিল খুঁজে পান তারা। পরিচয় নিশ্চিত করতে তার দেহের একটি নমুনা পাঠানো হয় ইসরাইলে। পরবর্তীতে পরিচয় নিশ্চিত করে তার মৃতদেহ ইসরাইলে নিয়ে যাওয়া হয়।
আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির দাবি, পরিচয় না জেনেই হত্যা করা হয়েছে সিনওয়ারকে। ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল না। ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, মৃত্যুর আগে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দালানে আহত অবস্থায় বসে ছিলেন তিনি। তবে তার অবস্থান নিশ্চিত করতে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কাজ করছিল তাদের ইন্টেলিজেন্স টিম। অর্থাৎ সিনওয়ার যে রাফার কোনো জায়গায় গোপনে আছেন, সে বিষয়ে ধারণা ছিল ইসরাইলি বাহিনীর।
তবে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুতে যুদ্ধ থামানো হবে না বলে জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু। যদি যুদ্ধবিরতি দিতেই হয়, তবে হামাসকে অবশ্যই জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে বলে জানান তিনি।
সিনওয়ার নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হামাসও। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটির গাজা অঞ্চলের প্রধান খলিল আল হায়া বলেন, ইয়াহিয়া সিনওয়ার গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, ইসরাইল গাজায় হামলা বন্ধ এবং অবরুদ্ধ গাজা থেকে নিজেদের বাহিনী প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে না।