নিখোঁজের পাঁচদিন পর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হলো ছয় বছরের শিশু মারিয়ার মরদেহ। বসুন্ধরা রিভারভিউ হাউজিংয়ের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে শাকিল নামে এক তরুণ। পরে লাশ গুম করতে পুঁতে রাখা হয়। মধ্যরাতে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে দুজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, খাবারের লোভ দেখিয়ে কৌশলে ডেকে এনে ঘটানো হয় এ পৈশাচিক ঘটনা।
শাকিল হোসেন নামে ১৯ বছরের তরুণ অনুসরণ করতে থাকেন শিশু মারিয়াকে (বামে)। এরপর তার ছোটভাইকে দিয়ে খাবারের লোভ দেখিয়ে মারিয়াকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে (ডানে)। ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া
ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ হাউজিং। বৃহস্পতিবার রাত ২টায় চারদিকে ঝোপঝাড় ঘেরা পরিত্যক্ত একটি টিনের ঘরে অভিযান চালায় পুলিশ। এলাকাটি থেকে ১৪ এপ্রিল নিখোঁজ হওয়া পাঁচ বছরের এক শিশুর সন্ধানে মূলত এ অভিযান। পুলিশের কাছে তথ্য আছে, ওই শিশুটিকে হত্যার পর টিনের এ ঘরটির মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়েছে।
শাকিল হোসেন নামে আটক ১৯ বছরের তরুণের আটক করে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযানে নামে পুলিশ। তার দেখানো মতে ৩০ মিনিট চেষ্টার পর সঙ্গে থাকা ডোমের সহায়তায় উদ্ধার করা হয় মরদেহটি।
দেখা যায়, শিশু মারিয়ার মরদেহ পঁচে গলে গেছে। পরিত্যক্ত টিনের ঘরে তাকে সুপরিকল্পিতভাবে নিয়ে এসে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার পর বালি চাপা দেয়া হয়।
এর আগে, ১৪ এপ্রিল মারিয়া নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় থানায়। সেই সূত্র ধরেই তদন্তে নামে পুলিশ। বিশ্লেষণ করা হয় অসংখ্য সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। একটি ফুটেজে শিশু মারিয়াকে কয়েকজনের সঙ্গে ঘটনার দিন খেলাধুলা করতে দেখা যায়। ওই ফুটেজে তাদেরকে অনুসরণ করতে দেখা যায় দুজনকে। এরা দু’জন আপন ভাই। এদের একজন শাকিল।
তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এ শাকিলই তার ছোট ভাইকে দিয়ে খাবারের লোভ দেখিয়ে ডেকে আনে মারিয়াকে।
কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাব উদ্দিন কবির বলেন, শিশুটিকে একটি স্পীড খাইয়ে আরও খাবারের লোভ দেখিয়ে নির্জন টিনের ঘরে নিয়ে আসে। এরপর তার হাত-পা বেঁধে তাকে ধর্ষণ করে। এতে শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তখন শাকিল ভয় পেয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বালিচাপা দেয়।
মারিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর রাতেই খবর দেয়া হয় তার মা-বাবাকে। গভীর রাতে তৈরি হয় এক শোকাবহ পরিস্থিতি। মেয়ে হারানোর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তারা।
পুলিশের ধারণা: এর আগেও অভিযুক্ত শাকিল এ ধরনের একাধিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এছাড়া, টিনের তৈরি পরিত্যক্ত বাড়িটিতে আর কোনো মরদেহ পুতে রাখা হয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।