সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচন আগামী ১ জুন। আর এই ভোটগ্রহণ পর্বের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ধ্যানে বসবেন। আর তারপর তা সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচার হলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবে তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার (৩০ মে) বারুইপুরের সভা থেকে সরাসরি এই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখানে কেন মমতা সভা করলেন? তাও জনসমক্ষে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, আমার আজ এখানে সভা করার কথা ছিল না। তবে পরে মনে হলো, বিজেপির মিথ্যাচারের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আছে। তাই এখানে এসেছি। ক্ষমতা থাকলে চ্যালেঞ্জ করুক বিজেপি। আপনি ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করেছেন। আমি তা মানব না। যেমন চলছে তেমন চলবে। আপনি থাকবেন না, আপনার আয়ু ৪ তারিখ পর্যন্ত।
লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শেষ হলে ধ্যানে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে দু’দিন ধ্যানমগ্ন হবেন তিনি।
বারুইপুরের সভা থেকে এ নিয়ে মোদির উদ্দেশে মমতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ধ্যানে বসা নিয়ে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সেই ছবি টেলিভিশনের পর্দায় সম্প্রচারিত হলে সেটি নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করবে। সেক্ষেত্রে ৩০ মে সন্ধ্যে ৬টার পর প্রধানমন্ত্রীর ধ্যানে বসা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে। ধ্যান করলেই ক্যামেরা ছুটবে। প্রত্যেকবার দেখবেন, নির্বাচনের শেষ দফার ৪৮ ঘণ্টা আগে কোথাও না কোথাও ঢুকে বসে থাকেন। আর লোককে দেখায়, ধ্যান করছি।
তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে মূল ভূখণ্ড থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি শিলায় বসে তিন দিন ধ্যান করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। সেখানেই বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরের মিলন হয়েছে। মনে করা হয়, সেখানেই আলোকপ্রাপ্ত হন বিবেকানন্দ।
হিন্দু ধর্মে কথিত, যেখানে শিবের জন্য তপস্যা করেছিলেন পার্বতী, সেখানেই রয়েছে ওই শিলা। ওই শিলার ওপর না কি পার্বতীর পায়ের চিহ্নও রয়েছে। সেই শিলা— ‘ধ্যানমণ্ডপম’য়েই দুই দিনের ধ্যানে বসবেন মোদী।। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শেষ করার পরেও কেদারনাথের গুহায় ধ্যানে বসেছিলেন তিনি।
এ নিয়ে মমতা বলেন, লোকে যখন পুজা করে, ছবি তুলতে হয়? না কি সমুদ্রের হাওয়া খেয়ে অক্সিজেন নেবে আর ৪৮ ঘণ্টা প্রচার চালাবে। উনি ধ্যান করবেন করুন, কিন্তু টিভিতে দেখাতে পারবে না। কারণ সেটি আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করবে। ১ জুন ভোট আছে। ৩০ তারিখ সন্ধ্যা ৬টার পরে আমরা এই বিষয়ে অভিযোগ জানাব। সমুদ্রের ওপর একটা ভালো জায়গা। ওখানে লোকে ঘুরতে যান।
স্বামীজি খুব ভালোবাসতেন। আর সেখানে গিয়ে উনি ধ্যান করবেন। উনি না কি দেবতার থেকেও বড় দেবতা। তাই যদি হয়, তবে ওর ধ্যান করার কী প্রয়োজন, লোকে ওর ধ্যান করবে। তাকে না কি ঈশ্বর পাঠিয়েছেন। তিনি না কি ঈশ্বরের দূত।’