ভারতে বসবাসরত মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা বলে সম্বোধন করা অপমানজনক নয় বলে মন্তব্য করেছে মুম্বাই পুলিশ। জনসভায় বিজেপি নেতাদের ‘মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য’ দেয়া সংক্রান্ত এক মামলায় মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) বোম্বে হাইকোর্টের সামনে দেয়া বক্তব্যে মুম্বাই পুলিশ এই মন্তব্য করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে বিজেপি নেতা নীতেশ রানে ও একই দলের বিধায়ক গীতা জৈন ভারতীয় মুসলিমদের সম্বোধন করতে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি শব্দ দুটি ব্যবহার করেন। ওই বক্তব্যের পর একদল মুসলিম বিষয়টি পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারা মতে মুম্বাই পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করার আবেদন করলেও পুলিশের পক্ষ থেকে সেই আবেদন নেয়া হয়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে বোম্বে হাইকোর্টে যান আবেদনকারীরা।
আদালতে আবেদনকারীরা বিজেপি নেতাদের দেয়া বক্তৃতার কিছু অংশ তুলে ধরেন, যেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অন্য অবমাননাকর অভিব্যক্তিগুলোর মধ্যে ‘রোহিঙ্গা’ ও ‘বাংলাদেশি’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করেছিলেন।
মুম্বাইয়ের ঘাটকোপার, মানখুর্দ, মালওয়ানি ও মীরা-ভায়ান্দরের কাশিমিরা এলাকায় জনসভার ভাষণে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচারের জন্য বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি রেবতী মোহিতে-দেরে ও শ্যাম চন্দকের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানিতে পাবলিক প্রসিকিউটর হিতেন ভেনেগাঁওকর আদালতকে বলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা- ২৯৫এ কেবল মানখুর্দে নীতেশ রানে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেখানে তিনি ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বিবৃতি দিয়েছিলেন।
তখন আবেদনকারীদের আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট গায়ত্রী সিং বলেন, রানে ঘাটকোপারেও একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন। জবাবে ভেনগাঁওকর বলেন, ‘পুলিশ কমিশনার বক্তৃতার প্রতিলিপিটি পর্যালোচনা করেছেন এবং ২৯৫এ ধারায় কোনো মামলা হয়নি।
ভেনগাঁওকর আরও বলেন, রানে ঘাটকোপারে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের নিয়ে ছিল।’ তার কথায়, ‘ধারা ২৯৫এ সংক্ষুব্ধ ভারতীয়দের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এটি স্বীকৃত অবস্থান যে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিরা ভারতীয় নন এবং এই মামলায় তারা অবৈধভাবে ঢুকে পড়েছেন।’