কখনো মুষলধারে আবার কখনো ঝিরিঝিরি করে গগণ চিরে ঝরছে বৃষ্টি। সারাদেশেই প্রায় একই অবস্থা। আবহাওয়া অফিস বলছে, সারাদিন থেমে থেমে এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক গণমাধ্যমে বলেন, আগামীকাল শুক্রবার থেকে বৃষ্টিপাত কমে তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
ঢাকায় আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা নাগাদ ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এই বৃষ্টির প্রায় পুরোটাই হয়েছে সকাল ৯টার পর। এর আগের তিন ঘণ্টায় ঢাকায় মাত্র দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ঢাকায় সকাল সকাল এত কম সময়ে এত ভারী বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী ছাড়াও জীবিকার তাগিদে গন্তব্যে ছুটে চলা মানুষ। বেশকিছু সড়ক ও অলিগলিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিভেজা রাজধানীর সড়কগুলোতে কোথাও কোথাও যানবাহনের জটলাও দেখা গেছে। সবমিলিয়ে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তাপপ্রবাহের দাপট কমলেও যানজট আর জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি বেড়েছে ঢাকার পথে পথে।
কী কারণে হচ্ছে এত বৃষ্টি
গেল মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের একটি সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়, ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা, অর্থাৎ আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে “মোটামুটি ভারী থেকে অতি ভারী” বর্ষণ হতে পারে। সেইসঙ্গে, তার দুদিন আগে সমুদ্রে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার কথাও বলেছে অধিদপ্তর।
এ কে এম নাজমুল হক বলেন, ‘সমুদ্রে লঘুচাপ তৈরি হয়, গত ২২ সেপ্টেম্বর। পরবর্তীতে এটি ভারতের ভেতরে প্রবেশ করে। কিন্তু বাংলাদেশে কনভিক্টিভ ক্লাউড বা পুঞ্জীভূত মেঘ তৈরি অব্যাহত থাকে।
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তার আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং মৌসুমী বায়ুর অক্ষের সাথে মিলিত হয়েছে।
এ কে এম নাজমুল হক আরও বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় অবস্থায় আছে। লঘুচাপ ও সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর মিলিত হওয়ার প্রভাবেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে দেশে।
এদিকে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কা কেটে যাওয়ায় দেশের ৪ সমুদ্রবন্দর থেকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) আবহাওয়ার সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিকের সই করা ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
এর আগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কায় বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দেশের ৪ সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ঝড়ের শঙ্কায় এই সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল।