শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে একটি পূজামণ্ডপে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র গ্রন্থ গীতা থেকে শ্লোক পাঠ করে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মতিয়ার রহমান।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপে মহাসপ্তমীর অনুষ্ঠানে ঘটে এ ঘটনা। জামায়াত নেতার সেই গীতা পাঠের ৫ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ইতোমধ্যে। অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, বক্তব্যের একপর্যায়ে উপস্থিত সবাইকে গীতা থেকে শ্লোক পাঠ করে শোনান অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। এ সময় সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা উলুধ্বনি দেন ও শঙ্খ বাজান। শ্লোক পাঠ শেষে জামায়াতে ইসলামীর এ নেতা আশ্বাস দেন, আগামীতে নির্বাচিত হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন তিনি। সেইসঙ্গে বলেন, আমি একা না আমার সাথে বিএনপির নেতারাও আছেন।
বক্তব্যের শুরুতে অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বলেন, এই কোটচাঁদপুরের আলো-বাতাস, মাটি ও মায়া-মমতাই বেড়ে উঠেছি আমি। ইসলামি আদর্শের একজন ব্যক্তি হলেও আমার ভেতর একজন ভালো সনাতনী হিন্দু ব্রাহ্মণ বাস করেন। আমার ভেতরে বাস করেন একজন ভালো খ্রিষ্টান এবং একজন ভালো মুসলিমও।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে এরপর তিনি বলেন, বিশ্বাস করুন, হিন্দু ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে মুসলমানদের কোরআন পাওয়ারও সাড়ে ৪ হাজার বছর পূর্বে। এই জাতিটা বাস করতো ভারতের কালীকোটের মালমল সিন্দুর হ্রদের অববাহিকায়। আড়াই হাজার বছর পর্যন্ত ওরা সেখানে বাস করেছে।
বৃহস্পতিবার দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীর রাত ১০টার দিকে বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যান কোটচাঁদপুর উপজেলা জামায়াতের নেতাকর্মীরা। অন্যান্যদের বক্তব্যের পর সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। বক্তব্যে ইসলাম ও সনাতন ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপের আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি গুরুদাস বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর জামায়াতের নেতা মতিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন মণ্ডপে এসেছিলেন। বক্তব্যে তিনি আমাদের ধর্ম সম্পর্কে অনেক জ্ঞান দেন। পরে গীতা থেকে একটি শ্লোকও পাঠ করেন।