মধ্যরাতে ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডি এলাকার একটি বড় অংশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধোঁয়ার কারণে বাসার ভেতরেও চোখ জ্বালাপোড়া করছে। অনেকে জানান, বাড়ির বারান্দা বা ছাদে গেলে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। যদিও ওই এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের কোনো খবর মেলেনি।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার একটু আগে বিশাল এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে পোস্ট দেন। ‘ট্রাফিক এলার্ট’ নামে একটি গ্রুপে স্থানীয় নাগরিকদের কেউ কেউ জানান, ধোঁয়ার সাথে বারুদের গন্ধও আছে।
ওই ফেসবুক গ্রুপে আফসান রহমান রিয়া নামে একটি আইডি থেকে দুটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘মোহাম্মদপুরের অবস্থা এতো খারাপ ও বাজে গন্ধ। এইদিকে হচ্ছে কী?’
সিফাত মাহমুদ লেখেন, ‘কাটাসুর থেকে বাশবাড়ি, নুরজাাহন রোড, চানমিয়া হাউজিং, জাপান গার্ডেন সিটি, তাজমহল রোড, শেখেরটেক পর্যন্ত ধোঁয়ায় ভরে গেছে। এক ধরনের বাজে গন্ধে ছেয়ে গেছে। চোখ জ্বলছে। পুরো এলাকা ঘুরেও উৎস খুঁজে পেলাম না।’
ইসতিয়াক হোসেন নামে একজন জানান, এই বারুদের গন্ধ শুধু মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডি নয়, পুরান ঢাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। তিনি লিখেন, এর আগেও এমন হয়েছে, কিন্তু এতো তীব্র ছিল না কখনোই।
তবে ধোঁয়ার উৎস সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি কেউ। এসব পোস্টের মন্তব্যের ঘরে কেউ কেউ বলছেন, আমিনবাজার ল্যান্ডফিলের কথা। সেখানে জমা হওয়া বর্জ্য পোড়ানোর কারণে এমন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারনা তাদের। আবার কারো কারো ধারণা গ্যাস লিকেজ বা পরিত্যক্ত গোলাবারুদ পোড়ানো থেকে ধোঁয়া হচ্ছে।
ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তৎপরতা শুরু করলেও কোনো কূলকিনারা পাননি তারাও। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষও বলেছে, তাদের কাছে গ্যাস লিকেজের কোনো তথ্য নেই।
মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনে রাতে দায়িত্বরত ফায়ার ফাইটার আরিফ হোসেন অসংখ্য ফোন পাওয়ার কথা জানান। তবে কেউ তাদের ধোঁয়ার সূত্র জানাতে পারেননি।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, প্রচুর ফোন আসায় তারা তিতাস গ্যাস এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের তথ্য পায়নি।
তবে রাত ২টা নাগাদ ধোঁয়া কমে আসে বলে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে।
সকালে ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাতে ১৮টি জায়গা থেকে তাদের কাছে ফোন আসে। এরমধ্যে আছে নবোদয় হাউজিং, জাপান গার্ডেন সিটি, নুর জাহান রোড, বাঁশবাড়ি বস্তি, ঢাকা উদ্যান, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, আল্লাহ করিম মসজিদ, শিয়া মসজিদ, ধানমন্ডি-শ্যামলী কাজী নজরুল ইসলাম রোড, বুদ্ধিজীবী রোড, আবাহনী মাঠ, ধানমন্ডির ৭-৯-১৩ এবং ঝিগাতলা এলাকা।
মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার হাসান নুর বলেন, ‘আমরা এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশকে জানিয়েছি।’
তবে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ বিষয়ে জানতে মোহাম্মদপুর থানায় ফোন করলে ডিউটি অফিসার জানান, তিনি সকালে এসেছেন। এ বিষয়ে এখনো কিছু জানতে পারেননি।