Friday, November 8, 2024

হাত তুলে হাসপাতালে নেওয়ার আকুতি জানিয়েছিলেন তৌফিক

আরও পড়ুন

মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে বাসের ধাক্কায় দুর্ঘটনার শিকার হন চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালের (চুয়েট) তিন শিক্ষার্থী। তাদের একজন তৌফিক হোসাইন। দুর্ঘটনার পর তার জ্ঞান ছিল। আশপাশে থাকা পথচারীদের আকুতি জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান ভাই। দয়া করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।’

ওই মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, তৌফিকের সাদা রঙের প্যান্ট ও কালো শার্ট ছিঁড়ে গেছে। তিনি পড়ে আছেন মাটিতে। তখনো কথা বলছিলেন। আকুতি জানাচ্ছিলেন। এরপর এক পথচারীকে বলতে শোনা যায়, ‘দ্রুত সিএনজি অটোরিকশা ডাক। ৯৯৯ নম্বরে ফোন দে।’

এরপর তৌফিককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছানোর আগে পথেই মৃত্যু হয় পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এ শিক্ষার্থীর। ঘটনাস্থলের মারা যান একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা। আহত হন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। গত সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তৌফিকের আকুতির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলেন, তৌফিকের পড়ে থাকার দৃশ্য ভিডিও না করে আরও আগে যদি তাকে হাসপাতালে নেওয়া যেত, তবে হয়তো তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল। কারণ, ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, তৌফিক কিছুটা স্বাভাবিক থেকে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন।

নিহত চুয়েট শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইনের জানাজা গতকাল মঙ্গলবার নোয়াখালী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। পরে জানাজা শেষে পৌর এলাকার লক্ষ্মীনারায়নপুর মহল্লায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। পরিবারে মা-বাবা ছাড়াও আছেন আরেক ভাই ও এক বোন। দুপুরে তাদের বাসায় গিয়ে দেখা যায় সবাই শোকে স্তব্ধ হয়ে আছেন।

তৌফিকের মা তাহেরা আক্তার সাথী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দুর্ঘটনার পর সাড়ে ৩টায় তৌফিকের সঙ্গে কথা হয়। মোবাইল ফোনে বলল, মা পায়ে ও হাতে ব্যাথা পেয়েছি, মাথা ঠিক আছে। মাথায় ব্যাথা পাইনি। আমি ঠিক হয়ে যাব। তুমি চিন্তা করো না। ‘পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলে মারা গেল,’ বলতেই কেঁদে ওঠেন মা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ