পরিচিত মানবদরদী হিসেবে, অথচ অপকর্মের শেষ নেই মিল্টন সমাদ্দারের। শিশু ও বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চুরি, ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু, মানুষ নির্যাতন, জমি দখলের মতো গুরুতর সব অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, কেউ সরাসরি অভিযোগ না করলেও ছায়া তদন্ত করে দেখবে তারা।
মানবতার ফেরিওয়ালা মিল্টন সমদ্দারের বিরুদ্ধে নির্যাতন থেকে শুরু করে এর চেয়েও গুরুতর অভিযোগ নতুন নয়। তার আশ্রমে যেসব ভবঘুরে, পরিত্যক্ত, অসহায় মানুষ থাকতেন, তারা মারা গেলো না কই হারিয়ে গেল সেসব জানানো হয় না জিম্মাদার বা অভিভাবককে।
যেমন একটি রশিদ দিয়ে চাইল্ড এন্ড অল্ড এজ কেয়ারে রাখা হয়েছিল অজানা মহিলা নামে এক বৃদ্ধাকে। কিন্তু পরে তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। দেড় মাস পরে তার জিম্মাদার খোঁজ আনতে গেলে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে বের করে দেয়া হয়।
এই আশ্রমে যারা মারা গিয়েছেন তাদের অনেকের শরীরেই কাটা-ছেড়ার দাগ থাকায় পাশের বায়তুস সালাহ মসজিদ মুর্দার গোসল করাতেও অস্বীকৃতি জানায়। মিল্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে মৃত্যুর সনদ জালিয়াতিরও। রাজধানীর দক্ষিণ পাইকপাড়ার ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানান, ডেথ সার্টিফিকেট নেয়া হতো না কাউন্সিলর অফিস থেকে।
১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আব্দুল মান্নান বলেন, যে পরিমাণ তার এখানে মৃত্যুবরণ করে তার তো একটা ডেথ সার্টিফিকেট নিতে হয়। আমি শুনেছি যে, সে নিজে নিজেই সীল মেরে দিয়ে দিতো।
মিল্টনের বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে। সেখানেও জালিয়াতি করে চার্চের ওপর প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। আশ্রমের আরেকটি শাখা খোলা হয়েছে সাভারে, সেখানেও রয়েছে জমি দখলের অভিযোগ। পুলিশ বলছে, তার বিরুদ্ধে মামলা না হলেও ছায়া তদন্ত শুরু করবেন তারা।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুন্সী ছাব্বীর আহম্মদ বলেন, যেহেতু এরকম একটা সংবাদ আমরা পাচ্ছি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা গোপনে বিভিন্নভাবে তদন্ত করেছি। যদি অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে পুরো বিষয়টি নিয়ে মিল্টনের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও মিল্টনকে পাওয়া যায়নি।