Friday, November 8, 2024

জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী চাইলে সরে যাব : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আরও পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী চাইলে দায়িত্ব থেকে সরে যাবেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, ছাত্রদের সব দাবি মানা হয়েছে। দাবি মানার পরও ছাত্রদের এই আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই, তাদের ঘরে ফেরা উচিত। আর জনগণের চাওয়া ও প্রধানমন্ত্রী চাইলে যদি আমাকে সরে যেতে হয় তাহলে সেটাতে আমরা রাজি আছি।

মন্ত্রী বলেন, এই আন্দোলন আর কোটা আন্দোলন নেই। কোটা আন্দলন ঘিরে রাজনৈতিক আন্দোলন যারা করছে, তারাই সহিংসতা চালাচ্ছে।

শনিবার (৩ আগস্ট) উদ্ভূত পরিস্থিতে করণীয় ঠিক করতে সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে সচিবালয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এরপর বৈঠক শেষে রাতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করে শনিবারের কর্মসূচি শেষ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার থেকে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সহিংসতা এড়াতে ফের কারফিউ চলবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রাজধানীতে এই কারফিউ রোববার (৪ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শিথিল থাকবে। তবে এই শিথিলের সময় বাড়ানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এ সিদ্ধান্ত ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী এবং নারায়ণগঞ্জ প্রযোজ্য হবে। অন্যান্য জেলার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সিদ্ধান্ত নেবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রংপুরের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটা ছাত্রদের দাবি ছিল এবং এটাই করা হয়েছে। আপনারা জানেন, গত শুক্রবার খুলনায় এক পুলিশ সদস্যকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এরপরও পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। আমাদের পুলিশ সদস্যরা সবসময় জনগণের হেফাজতের জন্য, জানমালের হেফাজতের জন্য কাজ করেন। তারা আন্দোলনের শুরু থেকেই ধৈর্যের সঙ্গে এই আন্দোলনের মোকাবিলা করে আসছে।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে ১৩৪ এইচএসসি পরীক্ষার্থী জামিন পেয়েছে। আরও যারা ছাত্র আছেন, তাদের সবাইকে জামিনে ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু যাত্রাবাড়ীতে পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে হত্যা করার মতো ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোটা আন্দোলনকারীদের সব দাবি কোর্ট এবং আমাদের পক্ষ থেকে মেনে নেওয়া হয়েছে। পুলিশকে বিচারের আওতায় আনার যে দাবি ছিল সেটিও আমরা করেছি। আমরা এখন আশা করব, যেহেতু আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের আর কোনো দাবি অবশিষ্ট নেই, তারা আন্দোলন তুলে নিয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে ফিরে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, আন্দোলন বর্তমানে যে জায়গায় পৌঁছেছে সেটা কখনোই তাদের কাম্য ছিল না। জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি সবসময় ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ছিল। শুরু থেকেই তারা দেশকে অকার্যকর করতে চেয়েছিল। তারা যেন এই সুযোগ নিতে না পারে সে কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে আহ্বান, তারা যাতে লেখাপড়ায় ফিরে যান। কারণ তাদের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। এরপরেও যদি তাদের কোনো দাবি থাকে তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দরজা সবসময় খোলা আছে। আমার মনে হয় যেহেতু শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, তাই তাদের এই অসহযোগ আন্দোলন তুলে নেওয়া উচিত।

এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে কোনো সাংবাদিক মারা যাননি দাবি করে তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যেসব গুলি পেয়েছি তার অনেকগুলিই পুলিশের গুলি নয়। এসব গুলি পুলিশ ব্যবহার করে না। যুবলীগের কর্মীরা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের বাধা দিতে গিয়েছিল, গুলি করতে নয়। এই আন্দোলনে আমাদের ছাত্রলীগের নেতারা, আওয়ামী লীগের নেতারাও নিহত হয়েছেন।

অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জনগণ যদি আন্দোলনে অংশ নিতে চায় তাহলে অবশ্যই নেবে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যদি আঘাত করা হয় তাহলে তারা তো সেল্ফ ডিফেন্স করবে। প্রাণ ও জানমালের রক্ষার্থে এই অধিকার তো সবারই আছে।

তিনি বলেন, এখন শোকের মাস চলছে। এই মাসের শুরু থেকেই আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম পালন করি। এজন্য এই মাস ঘিরে যে আমরা স্পেশাল কিছু করেছি এমন নয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ