উপদেষ্টা পরিষদের চতুর্থ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের
উপদেষ্টা পরিষদের চতুর্থ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৈষম্য বিবেচনায় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের এই সরকারটা হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আউটকাম। নিরাপত্তা সংস্থা এরকম বিশেষ নিরাপত্তার দরকার আছে বলে মনে করে না। আর এটাকে বৈষম্যমূলক মনে করা হয়েছে, সেটার ভিত্তিতে এটা রহিত করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা প্রদানসংক্রান্ত বিধানসমূহ প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় কার্যকর করা সম্ভব নয় বিধায় আইনের কতিপয় বিধান বিলোপসহ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টি সংযোজনপূর্বক ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (Special Security Force) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিগত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯’ (২০০৯ সালের ৬৩ নম্বর আইন) প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছিল। পরে সময়ে ১৫/০৫/২০১৫ তারিখে ওই আইন অনুসারে বিশেষ নিরাপত্তা এবং সুবিধাদি প্রদানের গেজেট জারি করা হয়। কেবল একটি পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ সুবিধা প্রদানের জন্য আইনটি করা হয়েছিল; যা একটি সুস্পষ্ট বৈষম্য।
আওয়ামী লীগ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯’ (২০০৯ সালের ৬৩ নম্বর আইন) প্রণয়ন ও জারি করা হয়। ২০১৫ সালের মে মাসে আইনটি অনুসারে বিশেষ নিরাপত্তা ও সুবিধা দেওয়ার গেজেট জারি করা হয়।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যগণ’ এবং কোনো রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) আইন, ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যদের নিরাপত্তা আইন ২০০৯’ এবং ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন ২০২১’ এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচ আর এস) সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান এ রিট আবেদন করেন। এ বিষয়ে আদালতে এখনো শুনানি হয়নি।
এর আগে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার ছাড়ার আগে ‘জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা বিল-২০০১ সংসদ পাস হয়েছিল। তবে বিএনপি নেতৃত্বে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এসে অষ্টম সংসদে সেটি বাতিল করে দেয়।