বাংলাদেশ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে পাকিস্তান। গত আগস্ট মাসের শুরুতে ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপরই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে তৎপর হয়েছে দেশটি।
পরে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে পাকিস্তানে হচ্ছে উচ্চপর্যায়ের নানা বৈঠক। এমনকি পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ নিজেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন এসব বৈঠকের।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে ইতোমধ্যেই রোডম্যাপ ও কৌশলপত্র প্রস্তুত করে ফেলেছে পাকিস্তান। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় দায়িত্ব পালনকারী রাষ্ট্রদূতসহ পাকিস্তানের কূটনীতিকরা দেশটির সরকারের জন্য একটি কৌশলপত্র তৈরি করেছেন। ঢাকায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পরে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য এই রোডম্যাপ তৈরি করেছেন তারা।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে উন্নয়ন ঘটানো যায় সে কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশে অতীতে দায়িত্বপালন করা পাকিস্তানের সাবেক হাইকমিশনার এবং অবসরপ্রাপ্ত অন্যান্য কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতদের কাছ থেকে তথ্য ও পরামর্শ নেওয়ার জন্যই এই বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
গত মাসের শুরুতে ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের সমাপ্তি ঘটে। আর হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়াকেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার সূচনা হিসেবে দেখছে পাকিস্তান।
হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কে নানা টানাপড়েন ছিল। যদিও ইসলামাবাদ বারবারই ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেছে, কিন্তু হাসিনা সেই প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা নেতা শেখ মুজিবের কন্যা ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তিনি প্রায়ই পাকিস্তানের নানা বিষয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে পরামর্শও করতেন। এ ছাড়া পাকিস্তান বিরোধিতাকে হাসিনা তার রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেও নিয়েছিলেন।
অবশ্য হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ভারতের জন্য গুরুতর ধাক্কা হলেও এটি পাকিস্তানের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নের একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখছে সেদেশের সরকার। আর সম্পর্কের সেই উত্তরণ ঘটানোর জন্য কলাকৌশলও ঠিক করছে দেশটির নেতারা।