অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে খবরটি প্রকাশিত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনন্দ মিছিল করেন সমন্বয়করা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এই মুহূর্তে খবর এলো, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলো; মুহূর্তে খবর এলো, সন্ত্রাসী লীগ নিষিদ্ধ হলো; হৈ হৈ রৈ রৈ, সন্ত্রাস লীগ গেলি কই; এই মুহূর্তে খবর এলো, ক্যাম্পাস সন্ত্রাসমুক্ত হলো- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, আজ আমাদের জীবনের অন্যতম আনন্দের একটা দিন। ছাত্রলীগ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার মতো কেউ ছিল না। এই ছাত্রলীগ ১৫ জুলাই আমাদের ওপর হামলা করেছে, সারা দেশে তারা অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে শহীদ করেছে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাই ছাত্রলীগের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য।
সমন্বয়ক আবু সাঈদ বলেন, আজকে আমরা অনেক বেশি খুশি। কারণ, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা সারা দেশ থেকে ছাত্রলীগ ও তার দোসরদের সমূলে উৎখাত করতে চাই। আজকে ঢাকা শহরের মিষ্টি শেষ হয়ে যাক, তবুও আনন্দ শেষ না হোক।
সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, একজন চারণ কবি বলেছিল ছাত্রলীগ নাকি ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু আজ তারা কোথায়? আজ খুনি হাসিনাও নেই, চারণ কবিও নেই, ছাত্রলীগও নেই। তারা বলেছিল তারা নাকি আমাদের ৭ মিনিটে আউট করবে। আজ আমরা দেখেছি, তারা মধুর ক্যান্টিনের সামনে ৪৬ সেকেন্ডে আউট হয়ে গেছে। তারা রাজপথ থেকে সৃষ্টি হয়ে রাজপথ থেকে পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আর কোনো মুজিববাদের ঠিকানা হবে না। ২৪ বিপ্লব সবাইকে দেখিয়েছে মুজিববাদ দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কাছে সত্য ইতিহাস গোপন করে রেখেছিল। কিন্তু এখন তারা আর সেটা পারবে না। আমরা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের পরাজিত করেছি। এখন দেশের সব সাধারণ মানুষ লুকায়িত সত্য ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে।
সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, ৫ আগস্টের পরে ছাত্রলীগ গর্তে লুকিয়েছে। তাদের নেত্রী ভারতে পালিয়ে গেলেও তাদের এ দেশে ফেলে গেছে। দেশের সব ছাত্র-জনতাকে বলতে চাই, আপনারা একটা একটা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গর্ত থেকে টেনে তুলে ধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করবেন। একজনও যেন আইনের হাত থেকে রক্ষা না পায়।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি আজ সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। তার আগেই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সরকার। বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়।