Thursday, November 7, 2024

ঢাবি রণক্ষেত্র: জরুরি বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত এলো

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় এবং আবাসিক হল বন্ধে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় প্রাধ্যক্ষরা রাতভর আবাসিক হলগুলোতে অবস্থান করবেন।
ঢাবিতে দুপুর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষের জেরে

সোমবার (১৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ কামালের সঙ্গে প্রভোস্টদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বৈঠকে নেয়া ৫টি সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব হলে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবেন; প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে সার্বক্ষণিকভাবে হলে অবস্থান করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন; হলসমূহে কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবেন না; যেকোনো ধরনের গুজব ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। সর্বশেষ সকলকে নাশকতামূলক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা যাচ্ছে। কেউ নাশতকতামূলক কাজে জড়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

পরে ঢাবি উপাচার্য সাংবাদিকদের জানান, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের হলের প্রাধ্যক্ষরা রাতভর হলে অবস্থান করবেন। মিটিংয়ে আমাদের আরো কিছু বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেগুলো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।’

এদিকে বৈঠকের পর স্যার এফ রহমান হলের প্রভোস্ট রফিকুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, হগুলোকে শান্ত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোনো হলেই পুলিশ প্রবেশ করছে না। তবে শহীদুল্লাহ হলের পাশে পুলিশকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। এখনই হল বন্ধের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

এর আগে বিকেলে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনে বৈঠকে বসেন বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরা। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় এই বৈঠক ঢাকা হয়।

দুপুর ২টার পর থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সময় সংবাদের প্রতিবেদকরা জানিয়েছেন, শুরুতে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে অংশ নিলেও পরে অন্যান্য হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। বিজয় একাত্তর হলের সংঘর্ষের রেশ ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসে। পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের হটিয়ে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নেন।

মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে শোডাউন করেন। কোটা আন্দোলনকারীরা যাতে পলাশী বা নীলক্ষেত থেকে আবারও ক্যাম্পাসে আসতে না পারেন, সে জন্য ফুলার রোডে অবস্থান নেন।

বিকেল ৫টার পর ঢাবির দোয়েল চত্বর এলাকায় ফের আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের দিকে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শহীদুল্লাহ আবাসিক হলের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল ছোড়া এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

আবাসিক হলের ভেতর থেকেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়া শুরু হয়। এরমধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে। তবে এ সময় পুলিশের কোনো উপস্থিতি ঘটনাস্থলে ছিল না। যদিও প্রথম দফা সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর ক্যাম্পাসে পুলিশ সদস্যদের ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। পরে সন্ধ্যা পৌনি ৭টার দিকে শহীদুল্লাহ হলের সামনে পুলিশ অবস্থান নিয়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেন। এতে দুপুর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ বন্ধ হয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ