Friday, November 8, 2024

‘সংগঠনের কেউ মারা গেলে সবাই আলহামদুলিল্লাহ পড়ে, এমন দলে আমার নাম না থাকুক’

আরও পড়ুন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) কোটা আন্দোলনকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলার ঘটনায় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের খুঁজতে লাটিসোটা নিয়ে বের হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে সোমবার রাত ১১টা পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে।

হামলার শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম ফরহাদ কাউসার। তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। রাত ৯টার বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা গিয়েছে মতানৈক্য। শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে লিখেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছি আসো খেলা হবে। এরপর থেকে ক্যাম্পাসে সক্রিয় হয়ে উঠেন নেতাকর্মীরা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষকতায় হামলার প্রতিবাদে কুবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গণহারে পদত্যাগ করছেন।

সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন হলের নেতাকর্মী প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে এ পদত্যাগ করেছেন।

বর্তমানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল, শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত হল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন।

সদ্য পদত্যাগ করা শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত হলের আইন বিষয়ক সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে বলেন, ছাত্র রাজনীতি ছিল আমার পছন্দের জায়গা, ভালোবাসার স্থান। আজকের পর থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। কেউ আমাকে ডাকবেন না। দত্ত হল কারও বাপের না।

সদ্য পদত্যাগকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, দুনিয়াই সবকিছু না, আখেরাত বলেও কিছু আছে। যে সংগঠনের কেউ মারা গেলে সবাই আলহামদুলিল্লাহ পড়ে এমন সংগঠনে আমার নাম না থাকুক।

নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করে পোস্ট করে বলেন, আমি লজ্জিত যে আমি এমন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম।

সদ্য ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগকারী ও ২০২১-২২ ব্যাচের তানজিনা আক্তার বলেন, আমিসহ নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের ১৬তম ব্যাচের সব মেয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রলীগ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। আজ থেকে ছাত্রলীগের কোনো প্রোগ্রামে আমরা যাব না।

কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, একজন ছাত্র হয়ে আরেকজন ছাত্রের শরীরে এমন নির্মমভাবে যারা আঘাত করতে পারে সেই দল থেকে ইস্তফা দিলাম।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ