রাজশাহীসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪। গুগলের অ্যান্ড্রয়েড অ্যালার্ট সিস্টেমের তথ্য বলছে, রাত ৮টা ৫ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়।
রাজশাহী ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও পাবনা জেলায় ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৃদু ভূমিকম্প হওয়ায় এর কম্পন অনুভূত হয়নি অনেকের।
ভারতের নদীয়া জেলার উত্তমপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ছিল ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। এখন পর্যন্ত এই ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুনঃ শিলাবৃষ্টিতে শীতল হবিগঞ্জ, হাওরে ভারী বৃষ্টির শঙ্কা
তীব্র তাপপ্রবাহে সর্বত্র হাঁসফাঁস অবস্থা। ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশে বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টির আশায় জেলায় জেলায় ইসতিসকার নামাজ আদায় হচ্ছে। দেশের মানুষ যখন বৃষ্টির আকাঙ্ক্ষায় উন্মুখ হয়ে আছে, তখন হবিগঞ্জে দেখা মিলেছে কালবৈশাখী ঝড়সহ শিলাবৃষ্টির। শিলাবৃষ্টিতে হাওরের বোরো ধান ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আজ রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে দুই ধাপে বানিয়াচং ও নবীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকা, গজনাইপুর, দেবপাড়া ও পানিউমদা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়। এতে অনেকের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলের দিকে ঝড় শেষ হওয়ায় শীতল হয়ে আসে প্রকৃতি। এরপর ঝড়ো বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। শিলাবৃষ্টিতে চলাচল করা অনেকেই আক্রান্ত হয়েছে। ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। কারও কারও বাসার টিনের চালা ফুটো ও জানালার কাঁচে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ২০ মিনিটের মতো এ শিলাবৃষ্টি স্থায়ী ছিল বলে জানা যায়।
কেউ কেউ এই শিলাবৃষ্টিতে স্বস্তি খুঁজে পেলেও অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। একেকটা শিলার ওজন ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম। এছাড়াও, রাস্তার ওপর ভেঙে পড়েছে গাছপালা। এতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে যান চলাচল। অনেকের বাড়ি-ঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ছাদসহ ভেঙ্গে পড়েছে সাইনবোর্ড। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুতের লাইন। এতে কয়েক হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টিনের ঘরবাড়ি ও হাওরের বোরো ধান। কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা যায়নি। স্থানীয় কৃষক মফিজ উদ্দিন জানান, ধান কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। এখন শিলাবৃষ্টির কারণে অনেক ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, হাওরের ধানের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আর কয়েক ঘণ্টা এভাবে শিলাবৃষ্টি হলে আমরা ধান ঘরে তুলতে পারতাম না।
এদিকে, হাওর অঞ্চলে সম্ভাব্য ভারী বৃষ্টির আভাসে ধান কাটায় আটটি পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুসারে, আগামী ৩ মে থেকে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব হাওর অঞ্চলের (সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নেত্রকোনা) অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
হাওর অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দণ্ডায়মান ফসল রক্ষার জন্য পরামর্শসমূহ হচ্ছে—
বোরো ধান ৮০ ভাগ পরিপক্ক হয়ে গেলে দ্রুত সংগ্রহ করে নিরাপদ ও শুকনো জায়গায় রাখা। দ্রুত পরিপক্ক সবজি সংগ্রহ করে ফেলা। নিষ্কাশন নালা পরিষ্কার রাখা, যেন ধানের জমিতে পানি জমে না থাকতে পারে। জমির আইল উঁচু করে দেয়া। ফসলের জমি থেকে অতিরিক্ত পানি সরিয়ে ফেলা। সেচ, সার ও বালাইনাশক প্রদান থেকে বিরত থাকা। বৃষ্টিপাতের পর বালাইনাশক প্রয়োগ করা এবং কলা ও অন্যান্য উদ্যানতাত্বিক ফসল-সবজির জন্য খুঁটির ব্যবস্থা করা।