Thursday, November 7, 2024

‘বিয়ের গোসল টাও পেলাম না, শেষ গোসল টাও পাব না’: গৃহবধূর চিরকুট

আরও পড়ুন

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে প্রেম ভালোবাসা ও অভিভাবকের অমতে বিয়ে করেন জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (১৯) নামের তরুণী। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যৌতুকের চাপে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় অবশেষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

শনিবার (১৩ জুলাই) রাত ১০টার দিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বিশগিরি পাড়া গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। রোববার (১৪ জুলাই) সকালে গৃহবধূ সুমাইয়ার মরদেহ ও চিঠি উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের আবুবকর সিদ্দিকের কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া। তার স্বামীর নাম শিপন। তিনি শেরপুর সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার বাসিন্দা।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গেল ৮ মাস আগে শিপন নামে যুবকের সঙ্গে ফেসবুকের প্রেম ভালোবাসা বিয়েতে গড়ায় জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়ার। অভিভাবকের অসম্মতিতে বিয়ে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিল না স্বামী শিপনের পরিবার। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি লেগে থাকত। এমন কী শিপন বিয়ের পর ৮ লাখ টাকার যৌতুকের জন্য সুমাইয়াকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদের সময় সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে এসে সেখানেই থাকছিলেন।

শনিবার রাতে সুমাইয়া মনের ক্ষোভে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। চিরকুটে সুমাইয়া লেখেন, ‘বিয়ের গোসল টাও পেলাম না। শেষ গোসল টাও পাব না। জানাজাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকতে দিলা না।’

সুমাইয়ার চিরকুটে আরও লেখাছিল, ‘আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালোভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই না দ্বিতীয় কেউ আমাকে উপভোগ করুক।’

বাবা মাকে উদ্দেশ্য করে সুমাইয়া লেখেন, ‘তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীরটা কাটতে (পোস্ট মর্টেম) দিও না। আমি তাহলে কষ্ট পাব।’

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভূঁইয়া জানান, নিহত সুমাইয়ার মরদেহ ও চিঠি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ