মাকে টিউশনি করতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন ফয়সাল আহমেদ শান্ত। সন্তানকে হারিয়ে যেন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের মহিষাদী গ্রামের জাকির হোসেন।
জানা গেছে, শান্তর বাবা জাকির হোসেন আগে চট্টগ্রামে জাহাজে চাকরি করলেও করোনাকালে তিনি রহমতপুরে ফার্নিচারের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর থেকে শান্ত, বৃষ্টি ও তাদের মা চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন। জাকির হোসেন থাকতেন বাবুগঞ্জে। ফয়সাল আহমেদ শান্ত চট্টগ্রামের ওমরগনি এমইসি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
শান্তর মা স্কুলশিক্ষিকা রেশমা আক্তার বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি কয়েকটি টিউশনি করে শান্ত তার হাতখরচ চালাত। আমার একটাই ছেলে। আশা-ভরসা সবই ছিল ছেলেকে ঘিরে। ঘটনার দিন গত ১৬ জুলাই শান্ত টিউশনি করাতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। এরপর শান্ত ফিরে আসে লাশ হয়ে।
শান্তর বাবা বলেন, আমার ছেলে কারও সঙ্গে কোনো ধরনের ছোট-বড় অপরাধ করে থাকলে মাফ করে দেবেন। আমি একজন শহীদের বাবা। আমার ছেলে সত্য প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন করেছে। সেখানে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তিনি হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন।
গ্রামবাসীরা জানান, মাঝেমধ্যে গ্রামে আসলে তার দেখা মিলত। তবে তার মধ্যে কোনো ধরনের খারাপ কিছু কখনোই লক্ষ করেননি তারা। নামের সঙ্গে হুবহু মিল ছিল শান্তর আচরণের।
বাবুগঞ্জের রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান মিলন বলেন, শান্ত তার বাবা-মায়ের সঙ্গে চট্টগ্রামে বসবাস করত। মাঝেমধ্যে গ্রামে আসত। খুব শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিল সে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসি দুই নম্বর গেট ও মুরাদপুর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দুই ঘণ্টা ধরে চলে সংঘর্ষ। ওই সময় মুরাদপুর দুই নম্বর গেটের মাঝামাঝি জায়গায় গুলিবিদ্ধ হন শান্ত।
পরিবারের পক্ষ থেকে টিউশনিতে যাওয়ার কথা বলা হলেও শান্তকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা মিসকাত জানান, তাদের সঙ্গেই আন্দোলনে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন শান্ত। বাবুগঞ্জের মহিষাদী গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়ে