Thursday, November 7, 2024

পুলিশ এগিয়ে আসলে আমরা পাহারা দেব : জামায়াত আমির

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘প্রশাসনের সঙ্গে ইতোমধ্যেই বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে আমাদের স্থানীয় দায়িত্বশীল পর্যায়ের নেতাদের মিটিং হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, তারা যদি দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসেন আমরা তাদের পাহারা দেব।’

রাজশাহীতে গুলিতে মারা যাওয়া মহানগর শাখা ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হানের জানাজা শেষে শুক্রবার (০৯ আগস্ট) বিকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে শুক্রবার বিকেল ৩টায় রাজশাহী কলেজ মাঠে নিহত শিবির নেতার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় জামায়াত ও শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা আমূল সংস্কার প্রত্যাশা করি। সংস্কারের যুদ্ধ শুরু হয়েছে কিন্তু এটি শেষ হয়নি। এই যুদ্ধে আমরা আছি এবং ইনশাআল্লাহ থাকব।’
জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘যে সমস্ত যুবসমাজ বৈষম্য থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য বুক উঁচিয়ে যুদ্ধ করেছেন সেই ছাত্র-যুবসমাজের যে প্রত্যাশা, এ দেশের ১৮ কোটি মানুষের যে প্রত্যাশা আমাদের দলের সেই একই প্রত্যাশা। আর সেই প্রত্যাশা হলো দেশের ইনসাব কায়েম করা, বৈষম্য ও বেইনসাবি দূর করা এবং মানুষের ন্যায্য অধিকার সুনিশ্চিত করা।’

আমিরে জামায়াত আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের গুরুত্বপূর্ণ যে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে সেখানে লাঠি হাতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের পাহারাদার হিসেবে বসিয়ে দিয়েছি। গত ৩ দিন ধরে তারা দিনরাত পাহারা দিচ্ছে। তাদের (সংখ্যালঘু) মধ্য থেকে অথবা সাধারণ নাগরিকদের মধ্য থেকে কেউ যদি নিরাপত্তাহীনতা ফিল করে তাদের সাহায্যের জন্য আমরা ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন ওপেন করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় পাড়ায় পাড়ায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কমিটি ফরমেশন করেছি। প্রথম দিন থেকে বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে আমরা জাতিকে আহ্বান জানিয়েছি আমরা এনার্কি বা বিশৃঙ্খলা হতে দেব না। এ জন্য আমরা সর্বদা সতর্ক রয়েছি। কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে আমরা তা প্রতিহত করব।’

এর আগে নিহত শিবির নেতার জানাজায় কান্নায় ভেঙে পড়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘স্বৈরাচার অবৈধ সরকার আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। অনেক নেতাকর্মীদের গুম করেছে। কারও খোঁজ পেয়েছি আবার কারও খোঁজ আমরা এখনো পাইনি। আমরা অবশ্যই জালিম সরকারের হত্যা, গুম, খুনের বিচার করব।’

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট দুপুরে রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি এলাকায় কোটা সংস্কারে আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান (২৮)। তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর গত বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

ওইদিন সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। আহত অনেকেই এখনো রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সংঘর্ষের স্থান থেকে পালানোর সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাকিব আনজুম সবুজ (২৭) নামের বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। এ আন্দোলনে রাজশাহীতে মৃত্যুর ঘটনা ছিল এটিই প্রথম। এরপর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে শিবির নেতা রায়হান মারা গেলেন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ