গত ১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা এবং তাদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করতে সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বিষয়টি নিয়ে এবার মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রও।
স্থানীয় সময় বুধবার (১৬ অক্টোবর) ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ নিয়ে কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বলেন, ‘বাংলাদেশে ৮ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা এবং তাদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করতে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদন মতে, ৫ আগস্টের মধ্যে এবং শেখ হাসিনার বিদায়ের পর ৮ আগস্টের মধ্যে ৩ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। ৪০০টিরও বেশি থানায় হামলা হয়েছে। কিছু বিক্ষোভকারী পরিকল্পিতভাবে অনেক আওয়ামী লীগ সদস্যকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।’
তার প্রশ্ন : মার্কিন প্রশাসন কি রাজনৈতিকসংশ্লিষ্টতা নির্বিশেষে সব ভুক্তভোগীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করবে?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মিলার বলেন,
আমরা স্পষ্ট বলেছি, সহিংসতার জন্য কোনো অজুহাত নেই। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হোক কিংবা যারা বিক্ষোভ করেছে তাদের দ্বারা সংঘটিত হোক; সহিংসতার জন্য দায়ী যে কাউকে জবাবদিহি করতে হবে।
এরপর ওই সাংবাদিক বলেন, ‘এমন খবর রয়েছে যে, বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীর এবং জামায়াতে ইসলামীর অনুসারীরা হিন্দুদের বৃহত্তম উৎসব দুর্গাপূজার আসরে ইসলামিক গান গেয়েছে। এমনকি সেখানে কোরআনের আয়াত পাঠ করার খবরও রয়েছে।’
তার প্রশ্ন ছিল, মার্কিন প্রশাসন এ ঘটনাকে কীভাবে দেখছে? ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশ ও আশপাশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র কি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করবে?’
নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকের প্রশ্ন ও ম্যাথিউ মিলারের উত্তর।
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন,
স্পষ্টতই আমরা বাংলাদেশ এবং অন্যত্র ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর নির্দিষ্ট ওই ঘটনার বিষয়ে আমি খোঁজ নেব এবং এরপর আপনার প্রশ্নের উত্তর দেব।
প্রসঙ্গত, গেল সোমবার (১৪ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এক নবযাত্রা সূচিত হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এ গণ-অভ্যুত্থানকে সাফল্যমণ্ডিত করতে যেসব ছাত্র-জনতা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনের মাঠে থেকে এর পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সংগঠিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ঘটনার জন্য কোনো মামলা, গ্রেফতার বা হয়রানি করা হবে না।’
এ সংক্রান্ত অসত্য তথ্য দিয়ে কোনো সুবিধা অর্জনের বিরুদ্ধেও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।