সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ধাপের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থী ঢাবির আইন বিভাগের ছাত্র। তিনি ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সমাধান করতেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর অঞ্চলের প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের মূল হোতা অসীম গাইন। তিনি ১০-১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করেন। যাদের বয়স শেষের দিকে তাদেরকে বিশেষভাবে টার্গেট করা হতো।
ডিবিপ্রধান বলেন, চুক্তির শুরুতে ২ লাখ টাকা, লিখিত পরীক্ষায় পাস করলে ৪ লাখ এবং চূড়ান্ত নির্বাচিত হলে ৬-৮ লাখ টাকা দেয়ার চুক্তি হতো।
তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর দ্রুত তা সমাধানের জন্য সহায়তা করেন তার আপন ভাইয়ের ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মেধাবী ছাত্র জ্যোতির্ময় গাইন। তার সঙ্গে ছিলেন আইন বিভাগের আরও দুজন সুজন চন্দ্র রায় ও বেনু লাল দাস।
হারুন বলেন, সমাধান করা প্রশ্নের উত্তর চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের মোবাইল নম্বরে এই তিনজন দ্রুততম সময়ে পাঠিয়ে দিতেন। এর বিনিময়ে অসীম গাইনের কাছ থেকে তারা মোটা অঙ্কের সুবিধা পেতেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, জ্যোতির্ময় গাইনের বড় ভাই এবং পলাতক আসামি অসীম গাইনের ভাইয়ের ছেলে তন্ময় গাইন সহকারী জজ হওয়ায় তারা আইনি প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে সহকারী জজ তন্ময় গাইন সরাসরি সম্পৃক্ত কি না, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হতে পারে বলে জানান তিনি।
মোহাম্মদ হারুন বলেন, অসীম গাইনসহ চক্রটি এর আগেও প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে এবং অল্পদিনেই কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। নিজ এলাকায় অসীম গাইনের বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া তিনি আদম ব্যবসা, হুন্ডি ব্যবসা, ডিশ/ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত বলে জানা গেছে।
এভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি অর্জনের পর অসীম গাইনের স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার এবং অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল বলেও জানান ডিবিপ্রধান।