রোববার থেকে খোলা থাকবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার (০২ মে) কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন।
সম্প্রতি তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বৃহস্পতিবার (০২ মে) পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
বিস্তারিত আসছে…
আরও পড়ুনঃ সারা দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধ বৃহস্পতিবার
দেশের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে বৃহস্পতিবার (২ মে) খুলছে না। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না কি বন্ধ এ ব্যাপারে অফিসিয়ালি (দাপ্তরিক) কিছু জানাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল নিজেদের মতো বন্ধের নোটিশ দিয়েছে। যেমন ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ইস্কাটনের এজি চার্চ স্কুল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
তাপমাত্রা বেশি এমন ২৭ জেলায় মঙ্গলবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না কি বন্ধ এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্তা না পাওয়ায় দোটানায় আছেন শিক্ষকরা। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে শুধু ২৭ জেলাই নয়, বৃহস্পতিবার সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। যদিও প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের বলেছেন, বুধবার (৩০ এপ্রিল) শিক্ষামন্ত্রী এ ব্যাপারে পরিষ্কার বক্তব্য দিয়েছেন। যেহেতু আদালত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেছেন তাই আপাতত আদালতের আদেশ মানা হবে। হাইকোর্টের আদেশের কপি না পাওয়া এবং সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার মত সময় না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ইস্যুতে ‘নো কমেন্ট’ অবস্থানে থাকবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, ঈদের ছুটির পর এক সপ্তাহ বন্ধ রেখে গত শনিবার থেকে চালু হয় স্কুল-কলেজ। দেশব্যাপী তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল খোলায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বহু শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বেশ কয়েকজন মারাও গেছেন। এমতাবস্থায় স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা খোলা রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে এমন পরিস্থিতিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার ক্লাস আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়- তবে সেসব স্কুলে এসির ব্যবস্থা আছে, পরীক্ষা চলমান আছে, ও লেভেল, এ লেভেল পরীক্ষা ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
আদালতে চলমান তাপপ্রবাহে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মনির উদ্দিন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রেহেনা সুলতানা, মো. সামিউল সরকার ও আশিক রুবায়েত।
এর আগে, গতকাল রোববার শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে যে তাপমাত্রা, এটা বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ নয়। সুতরাং এবার কেন এত আলোচনা হচ্ছে বিদ্যালয় বন্ধ রাখার জন্য, সেটা আমাদের ভাবতে হবে। বিদ্যালয় বন্ধ রেখে আসলে কী অর্জন করতে পারি? বিদ্যালয় বন্ধ, তার মানে এ শিক্ষার্থীরা কি ঘরে থাকবে?
তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আবহাওয়া অধিদপ্তরের যে পূর্বাভাস, তাতে রাজধানী ঢাকার যে তাপমাত্রা সেটার সঙ্গে তো আমি সারা দেশের তাপমাত্রা মেলাতে পারি না। এ মুহূর্তে ৪০ (ডিগ্রি) পর্যন্ত ওঠার সম্ভাবনা আছে পাঁচ জেলায়। আমাদের ৬৪ জেলার মধ্যে মাত্র পাঁচ জেলায় সেখানে পূর্বাভাস হচ্ছে ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছানোর। সেক্ষেত্রে সব বিদ্যালয় বন্ধ করে রাখাটা তো যুক্তিযুক্ত নয়। সেটা হচ্ছে আমাদের অবস্থান।
তিনি আরও বলেন, নির্দিষ্ট কোনো জেলাতে যদি অতিমাত্রায় তাপপ্রবাহ হয়, সেখানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় থেকে সেখানে নির্দেশনা দেওয়া আছে শিশুদের ক্ষেত্রে যাতে তাদের কষ্ট না হয়, সেটাও বলা আছে। এখন সবকিছুতেই বিদ্যালয়, আলিয়া মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা কিন্তু আসলে সঠিক নয়। আর রাজধানীকে কেন্দ্র করে আমরা যাতে সারা দেশকে বিচার না করি, সেটা আমি অনুরোধ রাখব।