আবারও বাণিজ্যিক জাহাজে হানা দিয়েছে সোমালি জলদস্যুরা। এবার তাদের শিকার হয় লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী এমভি ব্যাসিলিস্ক। তবে জাহাজটির ভাগ্য ভালো।
খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলদস্যুতাবিরোধী ফোর্স অভিযান চালিয়ে জাহাজটি মুক্ত করেছে।
রয়টার্সের শুক্রবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে প্রায় ৩৮০ নটিক্যাল মাইল পূর্বদিকে এমভি ব্যাসিলিস্ক হামলার শিকার হয়। তখন জাহাজটি উত্তরের দিকে যাচ্ছিল। সন্দেহভাজন জলদস্যুরা জাহাজে উঠে ক্রুদের মারধর শুরু করে।
জলদস্যুরা ১৭ জন ক্রুকে জিম্মি করে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিন্তু তার আগেই জাহাজটি থেকে সাহায্য চেয়ে বিপদসংকেত পাঠানো হয়।
২৩ নাবিক নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে এমভি আবদুল্লাহ
তখন ভারত মহাসাগর ও লোহিত সাগরে অবস্থান করা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলদস্যুতাবিরোধী ফোর্স জাহাজটির এগিয়ে আসে। তারা অপারেশন আটলান্টার যুদ্ধজাহাজ পাঠায়। এরপর সুযোগ বুঝে একটি হেলিকপ্টার থেকে এমভি ব্যাসিলিস্কে সেনা নামানো হয়।
সেনারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে জলদস্যুদের হাত থেকে জাহাজটি মুক্ত করে। উদ্ধার করা হয় ১৭ জন ক্রুকে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে ইইউ নৌ বাহিনী। তারা জানায়, অভিযানে ক্রুদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তারা সবাই নিরাপদ আছেন। এদের মধ্যে আগেই জলদস্যুদের হামলায় আহত ক্রুকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে ইইউ নৌ বাহিনী। তার অবস্থা স্থিতিশীল।
সোমালি জলদস্যুদের কবলে জাহাজ পড়ার ঘটনা নতুন নয়। সম্প্রতি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে তারা। প্রায় এক মাস পর ২৩ নাবিক মুক্তি পেয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
এমভি আবদুল্লাহ গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে যাত্রা করে। ১৯ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের হারমিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।
মুক্তিপণের বিনিময়ে দীর্ঘ এক মাস পর গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় মুক্তি পায় জাহাজসহ ২৩ নাবিক। মুক্তির পর জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ২১ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আল হারমিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে।
জাহাজটিতে থাকা ৫৫ হাজার টন কয়লা সেখানে খালাস করা হয়। পরে আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর লোড করা হয়। এসব পণ্য নিয়ে দেশে ফেরে এমভি আবদুল্লাহ।