Thursday, November 7, 2024

শাহীনের বাগানবাড়িতে নায়িকারাও যাতায়াত করতেন !

আরও পড়ুন

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম ওরফে আনার হত্যার মূলহোতা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক স্বর্ণ চোরাকারবারি আক্তারুজ্জামান শাহীনের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামে। এলাঙ্গী গ্রামের মাঠের মধ্যে ২৭ বিঘা জমির ওপর আছে শাহীনের আলিশান বাংলো বাড়ি। বাংলোতে আছে সুইমিং পুল, ক্রিকেট, গলফ-সহ জিমের ব্যবস্থা।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে এসে এখানে প্রায়ই থাকতেন তিনি। এই বাংলোতে আসা-যাওয়া ছিল শাহীনের বন্ধু আনোয়ারুল আজীমের। সেখানেই দুজনের একান্তে আলাপ হতো। শুধু তিনি না, মাঝে-মধ্যে গাড়ি নিয়ে বাংলোতে অজ্ঞাত লোকজনকে আসা-যাওয়া করতে দেখেছে গ্রামবাসী। এই তালিকায় ঢাকাই ছবির নায়িকারাও রয়েছেন- এমনটাই বলছে গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সংসদ সদস্য হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মিষ্টি জান্নাত সংসদ সদস্য হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মিষ্টি জান্নাত
১০/১১ বছর আগে এলাঙ্গী গ্রামের মাঠের মধ্যে ২৭ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন বিশাল বাংলো বাড়ি। এই জমিতে এক সময় ছিল ইটের ভাটা। সেই ভাটা তুলে দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাংলো বাড়িটি চারপাশ ঘিরে ফেলেন শাহীন। বাড়িতে প্রবেশ করার মাত্র একটি রাস্তা। বাড়িটি চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা, চারপাশে ঝোপঝাড়। আছে সিসি ক্যামেরা। বিদেশি কুকুর, অনেক কর্মচারী, ভিআইপি আসবাব দিয়ে সাজানো। অনেক অর্থ খরচ করে বাংলোতে নিয়েছেন বিদ্যুতের লাইনও। আমেরিকা থেকে এলে প্রায়ই শাহীন থাকতেন এই বাংলোতে। মাঝেমধ্যে গাড়িতে করে আসা-যাওয়া করতেন তার সঙ্গের লোকজনও। তার রয়েছে নিজস্ব বাবুর্চি। রান্না করে চলত খাওয়া-দাওয়া ও ভূরিভোজ। এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এই বাংলোটিতে আর কেউ নেই।

এলাঙ্গী গ্রামের লিয়াকত আলী ও লোকমান হোসেন জানান, দীর্ঘ ১০/১১ বছর আগে আক্তারুজ্জামান শাহীন এই বাংলোটি নির্মাণ করেছেন। এর ভেতরে কী হয় আমরা বলতে পারব না। মাঝেমধ্যে দেখি গাড়িতে করে লোকজন আসা-যাওয়া করেন। গাড়ির মধ্যে কারা থাকেন তাদের দেখা যায় না। বাইরে থেকে অনেক সময় রাতে ঢাকঢোলের আওয়াজ শোনা যায়।

তবে কেউ কেউ বলছেন এখানে একাধিকবার বাংলা চলচ্চিত্রের নায়িকাদের যাতায়াত করতে দেখেছেন তারা। বাড়ির দারোয়ানকে পাওয়া না গেলেও সফি উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘যাওয়া-আসার পথে দেখি গেটে লেখা, কুকুর হইতে সাবধান। আর ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেয় না। তবে কিছু সময় লোকজন আসে, ভেতরে ঢোকে। মাঝে মাঝে রাতে গানবাজনা হয়, মাইক বাজে। প্রায়ই গাড়ি নিয়ে ভেতরে ঢোকে। দিনে ও রাতের বেলায় কেউ মোটরসাইকেল নিয়েও ঢোকে।

কোটচাঁদপুরের মানুষ শাহীনের অপকর্মের বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছে। এতদিন মানুষ তার নির্যাতন সহ্য করেছে। দেড় বছর আগে কোটচাঁদপুরে দুটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই শাহীন জড়িত বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। এলাকাবাসী বলছেন, বাগানবাড়িতে বিভিন্ন সময় নামিদামি অনেক লোক আসা-যাওয়া করেন। রাতে সেখানে মদের আড্ডা আর সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে আমোদ-প্রমোদ করা হয়। শাহীন নিজেই এলাকায় সালিশ-দরবার করতেন। সেখানে তার রায়ই চূড়ান্ত হতো। কেউ বিরোধিতা করলে পুলিশ দিয়ে তাকে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে। তবে শাহীন এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন, তার বিরুদ্ধে থানা-পুলিশে অভিযোগ দিয়ে লাভ হতো না। শাহীন গত দেড় দশকে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।s

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ