ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন, যৌতুক গ্রহণ ও হত্যার হুমকির অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী জয়া সাহা।
আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। পরে উপাচার্য, উপ—উপাচার্য, প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার দপ্তরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন।
জয়ের দ্বারপ্রান্তে এনডিএ, নেহরুর রেকর্ড ছুঁতে যাচ্ছেন মোদিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এনডিএ, নেহরুর রেকর্ড ছুঁতে যাচ্ছেন মোদি
জয়া সাহা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। তিনি নাটোরের উপরবাজার উপজেলার রতন কুমার সাহার বড় মেয়ে।
শিক্ষক সঞ্জয় কুমার পাবনার চড়াডাঙ্গা গ্রামের সুশান্ত কুমার সাহার ছেলে। ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে সঞ্জয় ও জয়ার বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সাড়ে চার বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
গার্মেন্টস কর্মীরাও সৌন্দর্য্য চর্চার জন্য বাজেট রাখেন: ভোক্তা ডিজিগার্মেন্টস কর্মীরাও সৌন্দর্য্য চর্চার জন্য বাজেট রাখেন: ভোক্তা ডিজি
সংবাদ সম্মেলনে জয়া সাহা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে সে কথায়, কাজে, আচরণে আমাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর আমার জীবনে ভয়াবহ অমানুষিক, পাশবিক, শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। স্যান্ডেল, বেল্ট, ঝাঁটা, হাতা, খুন্তি, বেলনা থেকে শুরু করে হাতের কাছে যখন যা পেতো তা দিয়েই আমাকে শারীরিক নির্যাতন করতো। মাঝে মধ্যেই মারতে মারতে বলতো, ‘তুই বাপের বাড়ি যাস না কেন? বাঁচতে চাইলে বাপের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আয়।’
অনেক সময় মারতে মারতে অসুস্থ হয়ে পড়লে গাড়ি ভাড়া করে বাবার বাড়ি নাটোরে রেখে আসতো। সে আমাকে সব সময় মেরে ফেলার হুমকি দিতো। বলতো, ‘তাকে আমি একদিন মেরেই ফেলবো। এমন কায়দা করে খুন করবো সবাই জানবে তুই আত্মহত্যা করেছিস। খুন করেছি জানলেও আমার কিচ্ছু হবে না।’
‘দেশের অধিকাংশ কসমেটিকস পণ্য নকল’‘দেশের অধিকাংশ কসমেটিকস পণ্য নকল’
তিনি আরও বলেন, ‘সন্তানের সামনেই আমাকে নির্যাতন করতো। ছেলেকেও গালমন্দ ও বিভিন্ন সময় মারধর করে। স্যান্ডেল খুলেও মারে, এমনকি গায়ে গরম চা পর্যন্ত ছুড়ে শাস্তি দেয়। আমার সাড়ে চার বছর বয়সী সন্তানের ওপরও নির্দয় আচরণ করে।
সবশেষ ২০২৩ সালের ২৪ জুন সঞ্জয় আমাকে বাবার বাড়ি নাটোরে পাঠানোর জন্য বেধড়ক নির্যাতন শুরু করে। বলে, ‘আজ নাটোর যেতে রাজি না হলে তোকে মারতে মারতে মেরেই ফেলবো। আমি রাজি না হলে সূর্যকে (সন্তান) মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে আমাকে এবং ছেলেকে আমার বাবার বাড়ি নাটোরে রেখে যায়।’
এসব ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন জয়া সাহা। তিনি বলেন, ‘সঞ্জয় দীর্ঘদিন আমাকে না নিয়ে গেলে আমি নিজে এবং আমার বাবা-মা সঞ্জয়সহ তার বাবা মা ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে সে সাফ জানিয়ে দেয় যে, এই মুহূর্তে তার ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। সে চাইতো বেশি বেশি নির্যাতনের ফলে আমি বাবার বাড়ি চলে যাই। টাকা দিলে আমাদের নিয়ে যাবে, টাকা না দিলে নেবে না। পরে এ নিয়ে আমি আদালতে একটি মামলা করি।’
সঞ্জয় সরকার টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তার স্ত্রী জয়া সাহা। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী ও তার পরিবারের অন্যদের কাছে জেনেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পেতে অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে। সঞ্জয় সরকারের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়াটা তার গ্রামে ‘ওপেন সিক্রেট’। আমি আমার ওপর হওয়া অমানুষিক নির্যাতনের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ড. সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, ‘এটি আমার পারিবারিক বিষয়। এ নিয়ে আদালতে একটি মোকদ্দমাও চলছে। সংসারে অনেক ত্রুটি—বিচ্যুতি থাকে। কিন্তু আমার দরজা আমার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য সবসময় খোলা আছে। আমি এর থেকে বেশি মন্তব্য করতে চাই না।’
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে আজ সেটা দেখা হয়নি। আমরা আগামী কার্যদিবসে অভিযোগ দেখে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবো।’