ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এক গৃহবধূকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে ওই দুই আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে শনিবার রাতে ওই ভুক্তভোগী নারী চারজনকে আসামি করে বিজয়নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলো- বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ইসহাক মিয়া ও একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেন।
মামলার অন্য আরও দুই আসামি হলেন- কালাছড়া গ্রামের মো. হুমায়ুন ও হোসেনআরা বেগম।
মামলার এজহারে জানা যায়, মোবাইল চুরির অপবাদে গত ৮ জুলাই অভিযুক্তরা মহেষপুর গ্রামের হুমায়ুনের বাড়িতে ভুক্তভোগীকে ডেকে নেয়। সেখানে যাওয়া মাত্রই তার ওপর যৌন নির্যাতন শুরু করে। এ সময় ইসহাক মিয়া তার নাক, মুখ ও চোখে গামছা বেঁধে শরীরে গরম পানি ঢেলে দেয়। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তারা লাঠি দিয়ে তার দুই পা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে জখম করে। এ ছাড়া মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, মোবাইল চুরির করেননি বলে আকুতি মিনতি করলে তার পরিহিত কাপড় টেনেহিঁচড়ে তাকে যৌন নিপীড়ন করে।
ভুক্তভোগী শারমিন আক্তার বলেন, ঘটনার দিন ইসহাক মেম্বার আমাকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে হুমায়ুনের বাড়িতে ডেকে নিয়ে এমন নির্যাতন চালায়। আমি এর বিচার চাই। এ ঘটনায় মামলা করার পর থেকে বিভিন্নরকম হুমকি-ধমকি আসছে। আমি আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার ভুগছি।
ভুক্তভোগীর স্বামী মহরম আলী বলেন, আমার স্ত্রীর কোনো অপরাধ থাকলে আইন প্রশাসন তার ব্যবস্থা নেবে কিন্তু এভাবে প্রকাশ্যে নির্যাতন মেনে নেওয়া যায় না। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
বিজয়নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান জামিল খান জানান, এ ঘটনায় ওই নারী বাদি হয়ে এজহারনামীয় চারজনসহ অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে থানায় মামলায় দায়ের করেন। এ ঘটনায় আমরা দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।