Friday, November 8, 2024

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ আজ

আরও পড়ুন

দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১২টায় ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহিংসতায় অনেক শিক্ষার্থীর প্রাণহানি হয়েছে। এমতাবস্থায় আন্দোলন দমনের জন্য সাধারণ ছাত্র ও আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে যেভাবে গণগ্রেপ্তার চালানো হচ্ছে, সেটা রীতিমতো দেশের সংবিধানবিরোধী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। গত ১২ দিনে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে কোনো শিক্ষার্থী আছে কি না। এ ছাড়াও মামলা দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে ছাত্র-জনতা হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলার প্রতিবাদে ও জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে এবং ছাত্র সমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস এবং রাজপথে আগামীকাল বুধবার (৩১ জুলাই) ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করা হবে।

বিবৃতিতে তারা সরকারকে ৯ দফা দাবি মেনে নিয়ে দেশকে স্থিতিশীল করার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি সারা দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী, পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও সব নাগরিককে কর্মসূচি পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও দাবি আদায়ের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করার অনুরোধ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দেন। এক পর্যায়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেন। তাদের সঙ্গে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দেখা যায়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ নামের অবরোধও দেন। এক পর্যায়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীসহ সারা দেশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত করে হল খালি করার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ করা হয়। গত ১৮ জুলাই আন্দোলনকারীরা সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দেয়। ব্যাপক ভাঙচুর হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরে ২১ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা হয়। এতে সরকারি হিসেবে পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৫০ জন নিহত হয়েছেন। সহিংসতা দমনে সরকার অভিযান চালালে গত ২২ জুলাই থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। ক্রমে বাড়ে কারফিউ শিথিলের সময়। ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হয় অফিস।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ