ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাঈল হানিয়া নিহত হয়েছেন। ইরানের রাজধানী তেহরানে তিনি নিহত হন। হানিয়াকে হত্যার পর যুদ্ধ নিয়ে বার্তা দিয়েছেন তার ছেলে আবদুল সালাম হানিয়া।
বুধবার (৩১ জুলাই) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হানিয়ার ছেলে আবদুল সালাম হানিয়া বলেন, তার পিতাকে হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ শেষ করা যাবে না।
তিনি বলেন, আমার বাবা তার দেশপ্রেমিক যাত্রায় চারবার হত্যার চেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। আজ আল্লাহ তার শাহাদাত কবুল করেছেন। তিনি এটি সর্বদা চেয়েছিলেন।
হানিয়ার ছেলে আরও বলেন, তিনি জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন এবং সব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ঐক্যের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। আমরা নিশ্চিত করছি যে এই হত্যার মাধ্যমে প্রতিরোধকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। স্বাধীনতা অর্জন না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলতে থাকবে।
এর আগে আলজাজিরা জানায়, ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসমাইল হানিয়া গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হানিয়া মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) থেকে তেহরানে অবস্থান করছিলেন। হামাস নেতারা যে ভবনে অবস্থান করছিলেন সেখান থেকে বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে হানিয়া এবং তার একজন দেহরক্ষীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
বিষয়টি এক বিবৃতিতে হামাসও নিশ্চিত করেছে। তারা বলছে, আমাদের ভাই, নেতা, মুজাহিদ, স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার তেহরানের বাসভবনে বিশ্বাসঘাতক জায়নবাদীরা হামলা করেছে। তিনি শহীদ হয়েছেন। ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ফিলিস্তিনি জনগণ, আরব ও ইসলামি জাতি এবং বিশ্বের সব স্বাধীন মানুষের কাছে শোকের দাবি করে।
গাজা উপত্যকায় হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ২০০৪ সালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শেখ আহমেদ ইয়াসিন নিহত হন। এরপর উপত্যকায় ইসমাইল হানিয়ার প্রভাব বাড়তে থাকে। এ নেতার সরাসরি রাজনীতিতে উত্থান ঘটে ২০০৬ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে। তখন মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন বিভক্ত ফাতাহ দলকে হারিয়ে চমক দেখায় হামাস। ওই নির্বাচনে সাংগঠনিক পারদর্শিতায় কর্মীদের মন জয় করেন তিনি। এর ফলশ্রুতিতে ইসমাইল হানিয়া ২০১৭ সাল থেকে হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার জনপ্রিয়তায় তিনি বারবার গোষ্ঠীটির নেতা নির্বাচিত হন।