হামলা, মামলা, গুম-খুনের প্রতিবাদে এবং জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে, ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে এ কর্মসূচি পালিত হয় বলে জানান কোটা আন্দোলনকারীরা। এরপর ১ আগস্ট ঘোষণা করা হয় রিমেম্বারিং আওয়ার হিরো’স কর্মসূচি। এই কর্মসূচির আলোকে সারা দেশে গতকাল গত কয়েকদিনে নিহতদের স্মরণ এবং নানা সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালিত হয়। সর্বশেষ গতকাল ঘোষণা করা হয় প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল। এতে বলা হয়, মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া, শহীদদের কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্র-জনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ কর্মসূচিতে ভিন্নতা আনার বিষয়ে কালবেলাকে বলেন, আমরা কয়েকদিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু প্রশাসন তেমন গুরুত্ব দেয়নি। সে কারণে নতুন কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একদিন টিএসসিতে সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা বসলাম। সেই আলোচনায় কয়েকজন অবরোধ ও হরতালের মতো কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানাল। কিন্তু এগুলো অনেক পুরোনো এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি হওয়ায় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়নি। তখন আমাদের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ‘বিডি ব্লকেড’ কর্মসূচির প্রস্তাব দেয়। তখন এটি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হয়। বিডি ব্লক বা বিডি ব্লকেড কর্মসূচি দেওয়া যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর বিডি ব্লকেড থেকে সেটি হয়ে যায় বাংলা ব্লকেড। সেটি সব স্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়। এর পরে বিভিন্ন টকশোতে কর্মসূচির নামের বিষয়ে আমাদের প্রশ্ন করা হতো। তখন আমরাও উপলব্ধি করলাম, নাম একটা ফ্যাক্ট।
তিনি বলেন, এর পর থেকে আমরা ইউনিক কর্মসূচি দেওয়ার চেষ্টা করলাম। যাতে কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষার্থীদের দিকে কোনো ব্লেম না আসে। বাংলা ব্লকেড কয়েক ধাপে পালনের পর আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ নিয়ে একইভাবে টিএসসিতে আলোচনা হয়। তখন সবাই শিক্ষকদের আন্দোলন গতি না পাওয়ার কারণ খুঁজতে থাকে। তাতে বেরিয়ে আসে যে, শিক্ষকরা এক ধরনের আন্দোলন দিনের পর দিন করে যাচ্ছেন। সেজন্য সাড়া পাচ্ছেন না। এ ছাড়া এটি এপিসোডিকও ছিল না। সেটি বুঝতে পেরে সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা হোল শাটডাউন, টোটাল শাটডাউন ও কমপ্লিট শাটডাউনের মতো বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাব করে। এরপর সর্বসম্মতিক্রমে কমপ্লিট শাটডাউন নামটি চূড়ান্ত হয়। তিনি বলেন, মার্চ ফর জাস্টিস ও রিমেম্বারিং আওয়ার হিরো’স কর্মসূচির সময় আমরা ডিবি হেফাজতে ছিলাম। সে কারণে ভালো করে জানি না। তবে যারা এ সময় বাইরে ছিলেন তারা আলোচনা করেই এসব কর্মসূচি দিয়েছেন।