অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক। এ সময় তিনি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একাত্মতা এবং এ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থনের আশ্বাস দেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্কের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, অন্তর্ভুক্তিমূলক, মানবাধিকারকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করতে পারলে এ পরিবর্তন এবং সংস্কার সফল হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ভলকার তুর্ক।
জেনেভায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট ঢাকায় যে গণমিছিলের পরিকল্পনা এবং এর বিরুদ্ধে তৎকালীন ক্ষমতাসীল দলের নেতাকর্মীদের অবস্থানের বিষয়ে তুর্ক তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তিনি আশঙ্কা করেন, এর ফলে আরও প্রাণহানি এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হবে। তাই তিনি রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের জীবনের অধিকার এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় নিজ দায়িত্ব পালনের জন্য জরুরিভাবে আবেদন জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার বিষয়ে তদন্তের জন্য খুব শিগগিরই জাতিসংঘের নেতৃত্বে একটি তদন্ত শুরু করা হবে। এজন্য জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে।
টেলিফোনে আলাপকালে অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা তাকে এবং তার দীর্ঘদিনের বন্ধু জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে প্রধান উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানান।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মানবাধিকার রক্ষা এবং প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষা দেওয়া তার সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এ সময় তিনি দেশের পুনর্গঠন এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই থেকে দেশে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন। এই আন্দোলন ১৫ জুলাই থেকে সহিংসতায় রূপ নেয়। ১৬ জুলাই সংঘর্ষে নিহত হয় ছয়জন। ৫ আগস্ট পর্যন্ত এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ৪৩৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এর বাইরে গত ৬ আগস্ট পর্যন্ত আরও ১০৩ জনসহ দেশে মোট ৫৪২ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। ৭ আগস্টও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে যাওয়া আরও ২৬ জনের মরদেহ। যা নিয়ে আগস্টের ৭ তারিখ পর্যন্ত আন্দোলনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৬৮।