কুমিল্লার দেবিদ্বারে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের হামলার শিকার কিশোর আবু বকরের (১৬) অবস্থা সংকটপন্ন।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর একটি ট্রমা সেন্টারের লাইফ সাপোর্ট থেকে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স ও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের কারণে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। আবু বকর জেলার দেবিদ্বার উপজেলার শাকতলা গ্রামের মোল্লাবাড়ির আবুল খায়েরের ছোট ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট দেবিদ্বার সরকারি কলেজ রোডে কোটা আন্দোলনে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের নৃশংস হামলার শিকার হন আবু বকর। এ সময় তাকে প্রথমে পিটিয়ে এবং পরে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়।
তার বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ভাইয়ের এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। হামলায় মারাত্মক আহত ভাইকে নিয়ে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকায় নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু রাস্তার অবস্থা ভালো না থাকায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে ১০ আগস্ট কুমিল্লা নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। আইসিইউতে রাখতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। আমাদের সেই সামর্থ্য নেই।
শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, স্বজন ও সহপাঠীরা আইসিইউর সামনে বসে আছেন। চিকিৎসরা তার অবস্থা শংকটাপন্ন বলায় কান্নায় ভেঙে পড়ছেন পরিবারের লোকজন।
এদিকে খবর পেয়ে তার চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন, বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার এবং দেবিদ্বার পৌরসভার মেয়র মো. সাইফুল ইসলাম শামীম। তাদের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে কিছু অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
কুমিল্লা ট্রমা (প্রা.) হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আবদুল হক বলেন, আইসিইউতে থাকা ওই কিশোরের মাথায় সবচেয়ে বেশি আঘাত লেগেছে। তার ব্রেন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা তাকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়েছি। কিন্তু ব্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নিউরো সায়েন্সে পাঠিয়েছি। এ অবস্থা থেকে রোগীর ফিরে আসার সম্ভাবনা কম।