লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক। বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় যান তিনি।
সে সময় তাদের মধ্যে প্রায় ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ অনুষ্ঠান হয়। সাক্ষাতে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকী, বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।
প্রায় দেড় মাস বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২১ আগস্ট ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া। জানা গেছে, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিগগিরই যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। গতকাল ফিরোজায় এ বিষয়টি নিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের আলোচনা হয়েছে।
২০১৮ সালে কারাবরণ এবং হাসপাতালে চিকিৎসার পরে এই প্রথম ব্রিটিশ হাইকমিশনার ফিরোজায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে সাক্ষাতে এলেন। ব্রিটিশ হাইকমিশনার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন।
সাক্ষাতের পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামের স্বাস্থ্য নিয়ে কূটনৈতিক মহলে শঙ্কা ছিলো, চিন্তা ছিলো, উনার সুস্থতা নিয়ে সকলের একটা প্রশ্ন ছিলো। যেহেতু ম্যাডাম একটা পর্যায়ে কূটনীতিকদের সাথে দেখা-সাক্ষাত করতে পারছেন, দেশে একটা মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এই পরিবর্তনে। বাংলাদেশে মুক্ত পরিবেশে কূটনীতিকরা তাদের কাজগুলো এখন করতে পারছে। ওদের প্রথম জানার বিষয় ছিলো ম্যাডামের শরীর কেমন আছে? ম্যাডাম ভালো আছেন কিনা? উনার চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি আছে কিনা?- এসব বিষয় আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় কথা হয়েছে- এই পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে? নতুন প্রেক্ষাপটে আমরা কোথায় যাচ্ছি, বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে- এই বিষয় নিয়ে ম্যাডামের সাথে কথা বলেছেন। ইউকের সাথে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক, তাদের যে ভাবনা- সেটা তারা ম্যাডামকে বলেছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্রিটেন কী করতে চায়, দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে তারা কী করতে চায়- সেগুলো তারা ম্যাডামকে অবগত করেছেন। আমীর খসরু বলেন, ‘ম্যাডাম যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার কথা বলেছেন।’
অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামকে বিদেশে নিতে তার যে দীর্ঘ সময়ের জার্নি- সে বিষয়ে তার প্রস্তুতির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। মেডিকেল বোর্ড বলেছেন, ইউকেতে নেওয়া হলে ৮ থেকে ১৩ ঘন্টা সময় লাগে অথবা ইউএসএতে নিতে হলে ১৮ থেকে ২১ ঘন্টা ফ্লাইং আওয়ার লাগবে। কাজেই ফ্লাইংয়ের জন্য শারীরিক সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ইউকে ও ইউএসএ’র হসপিটালের সাথে আমাদের যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। ম্যাডামের মেডিকেল বোর্ডের যোগাযোগ আগে থেকে হয়েছে। উনার শারীরিক সুস্থতা ফ্লাইংয়ের মতো হলেই বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখা হবে, সেটা যত দ্রুত সম্ভব হয়।